ইমেইল কি, ই-মেইলের ইতিহাস : ইমেইল কি (What is Email)? আশাকরি এই প্রশ্নের উত্তর আপনারা সকলেই ভালো ভাবে জানেন। কারণ আমাদের মতো অনেকেই প্রতিদিনের জীবনে ইমেল এর ব্যবহার করে থাকে। বেশির ভাগ লোক সারাদিন নিজের ইমেইল আইডি check করতে থাকে। আমরা ইমেইল আইডির ব্যবহার বন্ধুদের photo, message এবং বিভিন্ন ধরনের files send করার জন্য ব্যবহার করে থাকি।
এছাড়াও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে sign up করার জন্য এবং বিশেষ করে বিভিন্ন officials কাজে এই ই-মেইল আইডি মেইল করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হল বর্তমান সময়ে Officials কাজে ফোন কল অথবা Postal mail এর স্থানে ইলেক্ট্রনিক মেইল বা ইমেইল ব্যবহার করা হয়। এখান থেকে বোঝা যায় যে ইমেইল একাউন্ট আমাদের Communication করার একটা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
এখনো অনেক বন্ধু আছে যারা জানে না ইমেইল কি এবং ই-মেইলে এর ইতিহাস কি। তাই তারা ইন্টারনেটে সার্চ করতে থাকে ই-মেইল এর পূর্ণরুপকি, ইমেইল আইডির ব্যবহার, ইমেইল কে আবিস্কার করেছিলো, কিভাবে ইমেইল একাউন্ট তৈরি করতে হয়, ইত্যাদি ইত্যাদি।
তাই সেই সব বন্ধুদের কথা ভেবে আজকের এই পোস্টে আমি ইমেইল কি এবং ইমেইল এর ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করব। যদি ইমেইল একাউন্ট নিয়ে কোন সন্দেহ থাকে, তবে এই পোস্ট টি সম্পূর্ণ পড়ার পরে আশাকরি আপনার সব Confusion দূর হয়ে যাবে। বেশি কথা না বলে শুরু করা যাক –
ইমেইল কি? ই-মেইল এর ইতিহাস এবং প্রাথমিক তথ্য
ইমেইল কি
আগেকার দিনে আমরা ডাক পরিষেবার মাধ্যমে যেভাবে চিঠি আদান-প্রদান করতাম, ঠিক একইরকম ইমেল হল চিঠি আদান-প্রদানের একটি আধুনিক ডাক পরিসেবা। এটি বাড়ি, স্কুল, কলেজ, আদালত, ব্যাংক এবং সরকারী বা বেসরকারী অফিস প্রায় সব জায়গায় ব্যবহৃত হয়। এই ইমেইল পরিসেবা ব্যবহার করে আমরা Message, Video, Photo এবং বিভিন্ন ধরণের নথিও পাঠাতে পারি।
ইমেইল (Email) এর পূর্ণরুপ (Full form) হল – ইলেকট্রনিক মেইল (Electronic Mail). ইমেইল হল কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের মাধ্যমে চিঠি পাঠানোর একটি উপায়।
ইমেইল ও কাগজে লেখা চিঠির মতোই। কিন্তু কাগজে লেখা চিঠি এবং ই-মেইল এর মধ্যে কিছু diffrence রয়েছে। Difference গুলো হল – কাগজে লেখা চিঠি কলমের সাহায্যে কাগজে লেখা হয়, যেখানে ই-মেল Keyboard এর সাহায্যে Computer অথবা স্মার্টফোনে লেখা হয়। কাগজে লেখা চিঠি ডাক সেবকের মাধ্যমে পাঠানো হয় অপর পক্ষে ইমেইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে কয়েক সেকেন্ডের মধে চলে যায়।
তবে ইমেল পাঠানোর জন্য একটি Unique ইমেল ঠিকানা প্রয়োজন, যেখানে একটা user name এবং Email Provider এর নাম থাকবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় helpwb@gmail.com হল একটি ইমেইল এড্রেস। এখানে helpwb হল user name এবং Gmail হল ইমেইল service provider এর নাম, মাঝখানে @ Sign টি user name এবং ইমেইল service providers কে আলাদা করে বোঝানর জন্য ব্যবহার করা হয়।
ইন্টারনেটে নিখরচায় অনেকগুলো ইমেল service providers রয়েছে এবং আপনি স্মার্টফোন থেকে যেকোনও ইমেল পরিষেবা থেকে ইমেল প্রেরণ করতে পারবেন।
ইমেইল এর ইতিহাস
যেকোনো বিষয় জানার শুরু তে সবার মনে প্রশ্ন আসে বিষয় টির সূচনা কবে হয়েছিল বা কে প্রথম সূচনা করেছিলেন। ঠিক একইভাবে ইমেইল এর ইতিহাস জানার আগে সবার মনে প্রথম যে প্রশ্ন আসে তা হল ইমেইল কে আবিস্কার করেছিলো অথবা কে প্রথম ইমেইল ব্যবহার কিরেছিল এবং ইমেইলে @ sign টি কে প্রথম ব্যবহার করেছিলেন।
এই সব প্রশ্ন গুলোর উত্তর হল- 1971 সালে, Ray Tomlinson প্রথম ইমেল বার্তা প্রেরণ করেছিলেন। Ray Tomlinson এই পরীক্ষামূলক ইমেল বার্তা টি নিজের কাছে প্রেরণ করেছিলেন এবং এই পরীক্ষামূলক ইমেইলে তিনি কিছু Text লিখেছিলেন তা হল “QWERTYUIOP“. ইমেইলে ব্যবহৃত ‘@’ সাইনটি প্রথম Ray Tomlinson বেছে নিয়েছিলেন। এই সমস্ত কারণে Ray Tomlinson কে ইমেলের আবিষ্কারক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
কিন্তু 1978 সালে, ভারতীয় বংশধর আমেরিকান V.A. Shiva Ayyadurai ‘ইমেল’ নামে একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম তৈরি করেছিলেন। এটিতে Inbox, Outbox, Folders, ইত্যাদি বিকল্প ছিল। 1982 সালের 30 আগস্ট American Government আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় আমেরিকান বংশধর V.A. Shiva Ayyadurai কে ইমেল আবিস্কারক হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
ইমেইল এর প্রকারভেদ
আশাকরি আপনি জানতে পেরেছেন ইমেইল কি এবং ই-মেইল এর ইতিহাস। এখন আমরা ইমেইল এর প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা করব। ইমেইল এর ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকারভেদ রয়েছে সেগুলো হল – WEBMAIL, POP3, IMAP এবং MAPI.
ওয়েবমেইল ( Web Mail)
কিছু ইমেইল Service Providers রয়েছে যারা ওয়েব ভিত্তিক ইমেইল সরবরাহ করে থাকে। যেমন – জিমেইল এবং ইয়াহু ওয়েব ভিত্তিক ইমেইল সরবরাহ করে থাকে।
POP3 ইমেইল সার্ভার
POP3 এর Full Form হল – Post Office Protocol 3. এই ইমেইল সারভারে একটি Application এর সাহায্যে ইমেইল দেখা হয় এবং একবার বার্তা পাওয়ার পরে এটি সার্ভার থেকে সরানো হয়।
IMAP ইমেইল সার্ভার
IMAP এর পূর্ণরুপ হল – Internet Message Access Protocol. এটি খুব ছোট এবং যে কোন জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায় এমন ডিভাইসে ব্যবহার করা হয়। আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত স্মার্টফোনে এটি ব্যবহার করি।
MAPI সার্ভার
MAPI এর Full Form হল – Messaging Application Programing. এটি সাধারণত মাইক্রোসফ্ট এক্সচেঞ্জ সার্ভারের সাথে সংযোগ করতে ব্যবহৃত হয়।
সেরা 10 টি ফ্রি ইমেইল সেবা প্রদানকারী ওয়েবসাইট
বর্তমান সময়ে বাজারে নিজস্ব কিছু ইউনিক ক্ষমতা সম্পন্ন সহ বেশ কয়েকটি ইমেল পরিষেবা সরবরাহকারী রয়েছে। যারা ফ্রি ইমেইল পরিষেবা দিয়ে থাকে। তার মধ্যে সেরা 10 টি ইমেইল সেবা প্রদানকারি ওয়েবসাইট এর নাম দেওয়া হল – ProtonMail, Zoha Mail, Outlook, Gmail, iCloud Mail, Yahoo Mail, AOL Mail, GMX, Yandex Mail, ইত্যাদি।
পরবর্তী সময়ে এই ইমেইল সেবা প্রদানকারী ওয়েবসাইট গুলো নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব । এবং কিভাবে প্রতি টি ওয়েবসাইটে ইমেইল একাউন্ট তৈরি করতে হয়, সেই বিষয় গুলো নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করব। গুগল জিমেইলে কিভাবে ইমেইল একাউন্ট তৈরি করতে হয়, এই বিষয়ে আমাদের সাইটে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। যদি আপনি জানতে চান কিভাবে জিমেইল অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়, তবে নিচে ক্লিক করে জেনেনিন।
পড়ুন কিভাবে জিমেইল একাউন্ট তৈরি করতে হয়।
ইমেইল এর ব্যবহার
এখন আমরা ইমেইল এর ব্যবহার জানব, যে ইমেইল কি কি কাজে ব্যবহৃত হয়। ইমেইল এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে, সেগুলো হল- ইমেইল আইডি দিয়ে আমরা আমাদের family members এবং বন্ধুদের text message, images, video এবং প্রয়োজনীয় files send করার জন্য ব্যবহার করে থাকি। এটি বাড়ি, স্কুল, কলেজ, আদালত, ব্যাংক এবং সরকারী বা বেসরকারী অফিস প্রায় সব জায়গায় ব্যবহৃত হয়।
ইমেইল এর সুবিধা
যদি কেউ আমাদের সাথে অনলাইনে যোগাযোগ করতে চাই,তবে ইমেলের মাধ্যমে তারা আমাদেরকে সাথে একটি ইমেইল বার্তা পাঠিয়ে যোগাযোগ করতে পারবে। ইমেইল এরকিছু সুবিধা রয়েছে সেগুলো হলো –
ইমেইল সরবরাহের গতি খুব দ্রুত হয়। যার ফলে আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে তথ্য পেয়ে যায়।
ইমেইল যেকোনো ধরনের File attach করতে পারবেন।
ইমেল আপনার সমস্ত কথোপকথন রেকর্ড করে রাখে। সুতরাং আপনি যে কোনও সময় রেকর্ডের মতো এই কথোপকথনগুলি দেখতে পারেন।
ইমেল আপনি unlimited Space পাবেন। এর সাহায্যে আপনি আপনার ইচ্ছে মতো সময় নিয়ে ইমেইল লিখতে পারবেন আর যদি ইমেইল লিখতে গিয়ে ভুল হয়ে যায়,তবে প্রেরণের আগে ভুল সংশোধন করে লিখতে পারবেন।
ইমেইল এর অসুবিধা
এতক্ষণে আমরা ইমেইল এর সুবিধা গুলো জানলাম। আপনি কি জানেন ইমেলের সুবিধার সংে সংে বেস কিছু অসুবিধা ও আছে। ইমেলের অসুবিধা গুলো নিচে আলোচনা করা হল –
ইমেল প্রেরণ বা গ্রহণের জন্য ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন। যদি Internet Connection না থাকে, তবে ইমেইল গ্রহণ বা প্রেরণ করা যাবে না।
ইমেইলে আমরা খুব বড় আকারের ফাইল প্রেরণ করতে পারবনা। এর একটা নির্দিষ্ট সীমা আছে।
Emails এর মাধ্যমে আমরা সব Formet এর Files প্রেরণ করতে পারিনা।
ইমেইল এর সাথে সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১. ইমেইল (Email) এর Full Form কি?
উত্তর : ইমেইল (Email) এর পূর্ণরুপ (Full form) হল – ইলেকট্রনিক মেইল (Electronic Mail)
প্রশ্ন ২. ইমেইল কি ?
উত্তর : ইমেল হল চিঠি আদান-প্রদানের একটি আধুনিক পদ্ধতি। এটি বাড়ি, স্কুল, কলেজ, আদালত, ব্যাংক এবং সরকারী বা বেসরকারী অফিস প্রায় সব জায়গায় ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন ৩. কে প্রথম ইমেইল প্রেরণ করেছিলেন?
উত্তর : 1971 সালে, Ray Tomlinson প্রথম ইমেল বার্তা প্রেরণ করেছিলেন। Ray Tomlinson এই পরীক্ষামূলক ইমেল বার্তা টি নিজের কাছে প্রেরণ করেছিলেন এবং এই পরীক্ষামূলক ইমেইলে তিনি কিছু Text লিখেছিলেন তা হল “QWERTYUIOP”.
প্রশ্ন ৪. ইমেইল কে আবিস্কার করেছিল?
উত্তর : ইমেইল এর আবিস্কার Ray Tomlinson করেছিলেন। কিন্তু 1982 সালের 30 আগস্ট American Government আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় আমেরিকান বংশধর V.A. Shiva Ayyadurai কে ইমেল আবিস্কারক হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
প্রশ্ন ৫. ইমেইল ব্যবহৃত “@” প্রতীকটি কে প্রথম ব্যবহার করেছিলেন?
উত্তর : ইমেইলে ব্যবহৃত “@” চিহ্নটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন Ray Tomlinson.
আশাকরি ইমেইল কি এবং ই-মেইল এর ইতিহাস কি এই পোস্ট টি পড়ে আপনি ইমেইল কি এবং ই-মেইল এর প্রাথমিক বিষয় গুলো জানতে পেরেছেন। তারপর ও যদি কোন Confusion থাকে, তবে comment করে জানাবেন। আর এই পোস্ট টি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সঙ্গে Social networking websites ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার ইত্যাদি সাইটে Share করবেন, যার ফলে আপনার বন্ধুরা ও ইমেইল কি এবং ই-মেইল এর ইতিহাস জানতে পারে।
আরও পড়ুন :
জিমেইল ফোন নাম্বার চেঞ্জ করার নিয়ম।
2 thoughts on “ইমেইল কি এবং ই-মেইলের ইতিহাস”